গাড়ির নিচে নারীর আটকে পড়ার বিষয়টি টেরই পাননি ঢাবির সাবেক শিক্ষক
ডেস্ক রিপোর্ট
272
প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ | ১০:১২:২৬ এএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রাইভেটকারের নিচে আটকে পড়া নিহত গৃহবধূ রুবিনা আক্তারকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ঢাবির সাবেক শিক্ষক আজাহার জাফর শাহ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক। পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেন, গাড়িতে একজন আটকে থাকার বিষয়টি টেরই পাননি।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজাহার জাফর এ দাবি করেন। গাড়িটি আটকের পর তাকে পিটুনি দেয় জনতা। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওসি নূর মোহাম্মদ জানান আরও জানান, গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করা হলেও তিনি থামেননি, বরং পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এছাড়াও চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কিনা সে বিষয়ে কোনো তথ্য আমরা পাইনি। গাড়িতে লাইসেন্স সংক্রান্ত কোনো কাগজ ছিল না।
প্রতি সপ্তাহে নিজ বাসা তেজগাঁও তেজকুনি পাড়া থেকে হাজারিবাগে যেতেন গৃহবধূ রুবিনা আক্তার। তার স্বামী মারা গেছেন দু বছর আগে। তাদের এক ছেলে রয়েছে। সে ক্লাস এইটে পড়ে।
অন্যান্য সপ্তাহের মতো শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) ননদের স্বামীর মোটরসাইকেল চড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে হাজারিবাগে যাচ্ছিলেন তিনি। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে চারুকলা অনুষদের বিপরীতে পাশের রাস্তা ধরে যাওয়ার সময় একটি প্রাইভেটকারের ধাক্কায় পড়ে যান রুবিনা। চালক গাড়ি না থামিয়ে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় প্রাইভেটকারের নিচে আটকে পড়েন রুবিনা। টিএসসি, ভিসি চত্বর হয়ে মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের কাছাকাছি পর্যন্ত তাকে এভাবেই টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় গাড়িটি।
এরপর লোকজন গাড়িটি আটকে নিচ থেকে রুবিনা আক্তারকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গাড়ি আটকের পরেই চালক আজাহার জাফর শাহকে মারধর করেন পথচারীরা। শাহাবাগ থানার পুলিশ পরে তার পরিচয় নিশ্চিত করে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক। আহত অবস্থায় বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
রুবিনার মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন রমনা বিভাগের উপ কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এটা অবশ্যই একটি হত্যাকাণ্ড।’
শহিদুল্লাহ্ আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, নিহত মহিলা দেবরের সঙ্গে বাইকে করে শ্বশুর বাড়ি থেকে তার বাপের বাড়ি হাজারিবাগে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তারা যখন শাহবাগ থেকে টিএসসির আগে কাজী নজরুলের মাজারের উল্টো দিকের রাস্তায় পৌঁছান, তখন প্রাইভেট কারটি মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিলে তিনি পড়ে প্রাইভেট কারের সঙ্গে আটকে যান।
তিনি বলেন, এরপরও উনি গাড়িটি না থামিয়ে টেনে-হিঁচড়ে চলে যান। তাকে থামানোর অনেক চেষ্টা করা হয়। উনি টিএসসি পৌঁছলে আমাদের মোবাইল টিমও তাকে থামানোর চেষ্টা করে। তারপরও উনি না থামিয়ে আরও জোরে গাড়ি চালিয়ে নীলক্ষেত মোড়ে গেলে উত্তেজিত জনতা তাকে থামতে বাধ্য করে। এই সম্পূর্ণ সময় সেই নারীটি গাড়ির সঙ্গে ছেঁচড়ে গেছেন।
শহিদুল্লাহ্ বলেন, গাড়ির চালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। উত্তেজিত জনতার পিটুনিতে তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন।
তিনি আরও জানান, যেহেতু এটা মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা তাই আমরা একটা মামলা নেব। উনার গাড়িটা সিজ করেছি। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশ সম্পর্কিত আরও
ট্রেন লাইনচ্যুত, খালে ৪০ হাজার লিটার তেল
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলেন টেকনাফগামী জাহাজের যাত্রীরা
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
চুয়াডাঙ্গায় বাউলদের আখড়াবাড়িতে দুর্বৃত্তের হামলা, অগ্নিসংযোগ
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ঢাকা সিএমএম আদালত ভবনে আগুন
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
সবচেয়ে দীর্ঘ রানওয়ে হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দরে
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
রাজধানীর শ্যামপুরে টেক্সটাইল মিলে ভয়াবহ আগুন
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩